ঢাকা ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

প্রাসাদে বন্দিজীবন সম্রাটের: সুখ-শান্তি সব দল বেঁধে উড়ে গেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৮৬ বার

TOPSHOT - Japan's Emperor Naruhito (L) and Empress Masako (R) depart Akasaka Palace for the court banquet at the Imperial Palace in Tokyo on October 22, 2019. - Japan's Emperor Naruhito completed his ascension to the Chrysanthemum throne in a ceremony steeped in the traditions and grandeur of a monarchy that claims 2,000 years of history. (Photo by STR / JIJI PRESS / AFP) / Japan OUT

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দ্য টেমস অ্যান্ড আই’ সম্রাট নারুহিতোর স্মৃতিকথা। ৩৭ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালে এটা লেখেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো তিনি অনেক মজা ও আনন্দে কাটিয়েছেন।

পড়াশুনার পাশাপাশি যখন যা ভালো লাগত তাই করতেন। কখনও ছবি আঁকতেন। মনে হলেই বন্ধুদের সঙ্গে চলে যেতেন ঘুরতে। আবার কখনও কখনও যেতেন ডিসকো ও মদের বারেও। সোনালি সেই দিনগুলোর কথাই স্মৃতিকথায় উঠে এসেছে।

স্মরণ করেছেন, একদিন জিন্সের প্যান্ট পরার কারণে দারোয়ান কিভাবে তাকে ডিসকো থেকে বের করে দিয়েছিল; যা সচরাচর জাপানের রাজপরিবারের কোনো সদস্যের বেলায় ঘটে না। ওই সময়টাকে ‘জীবনের সবচেয়ে সুখ ও আনন্দের সময়’ বলে নিজের স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

চলতি বছরের মে মাসে বয়সের ভারে ন্যুব্জ তার বাবা সম্রাট আকিহিতো দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন। উত্তরাধিকার সূত্রে ১২৬তম সম্রাট হন নারুহিতো।

মঙ্গলবার আঞ্চলিক দেশগুলো ও বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে মূলত রাজপ্রাসাদে বন্দিজীবন শুরু হল নারুহিতোর। সেই সঙ্গে যেন উড়ে গেল সব সুখ-শান্তি।

১৯৬০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেন নারুহিতো। মূলত রাজপ্রাসাদের কড়াকড়ির মধ্যেই কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। তবে জাপানের আর দশটা শিশু-কিশোরের মতোই তার শিশুকাল ছিল হাসি-খুশির।

প্রাসাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলে-মেয়ের সঙ্গে খেলা করতেন। কৈশোরে পড়াশুনার পাশাপাশি পাহাড়ে ওঠা, ঘোড়ায় চড়া আর ভায়োলিন বাজানোর মতো কর্মকাণ্ড উপভোগ করতেন তিনি।

একদিন প্রাসাদের কাছেই প্রাচীন একটি রাস্তার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান; যা তাকে পথ ও পরিবহনের প্রতি আগ্রহী করে তোলে এবং পরবর্তীতে নিজের সেই আগ্রহের বিষয়টাতেই উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

তরুণ বয়সে খেলাধুলা আর নানা সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন নারুহিতো। ভালো টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। অনুশীলন করতেন জুডো ও কারাতে। কারাতে ও জুডো ক্লাবের সস্মানসূচক প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন। যোগ দেন ‘জাপান সোসাইটি’ ও ‘ড্রামা সোসাইটিতে’। অক্সফোর্ডে থাকতে গলফ খেলাতেই হাত পাকিয়েছিলেন। চড়েছেন ব্রিটেনের তিন রাজ্যের তিন সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ায়ও।

রাজপরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে জাপানের বাইরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন নারুহিতো। লেখাপড়ার পাঠ চুকাতেই ১৯৯১ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে যুবরাজ হিসেবে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত হন তিনি। অবশেষে মঙ্গলবার নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তিনি।

এর মধ্য দিয়ে তিনি আসলে স্বেচ্ছায় এক বন্দিজীবন বেঁছে নিলেন। কারণ জাপান সম্রাটের জীবন কঠোর নিয়ম-কানুন আর আচার-উপাচারের রহস্যে ভরা। শৈশব, কৈশোর ও আর যৌবনে অক্সেফোর্ডে যে সুখ ও আনন্দে কাটিয়েছেন তার ছিটেফোটাও নেই তার এই জীবনে।

এখন প্রতিনিয়ত তাকে আর তার পরিবারকে চলতে হচ্ছে ‘ইমপেরিয়াল হাউসহোল্ড এজেন্সি’ নামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কথা মতো। তারাই বলে দেয়, রাজপরিবার কী করতে পারবে আর কী পারবে না। বিশ্লেষকদের মতে, নিয়মকানুনের ক্ষেত্রে জাপান সম্রাট ও রাজপরিবার এতটাই বাঁধা যে, এক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা ভোগ করে ব্রিটিশ রাজপরিবার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা

প্রাসাদে বন্দিজীবন সম্রাটের: সুখ-শান্তি সব দল বেঁধে উড়ে গেছে

আপডেট টাইম : ১০:১৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দ্য টেমস অ্যান্ড আই’ সম্রাট নারুহিতোর স্মৃতিকথা। ৩৭ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালে এটা লেখেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকে তিনি ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো তিনি অনেক মজা ও আনন্দে কাটিয়েছেন।

পড়াশুনার পাশাপাশি যখন যা ভালো লাগত তাই করতেন। কখনও ছবি আঁকতেন। মনে হলেই বন্ধুদের সঙ্গে চলে যেতেন ঘুরতে। আবার কখনও কখনও যেতেন ডিসকো ও মদের বারেও। সোনালি সেই দিনগুলোর কথাই স্মৃতিকথায় উঠে এসেছে।

স্মরণ করেছেন, একদিন জিন্সের প্যান্ট পরার কারণে দারোয়ান কিভাবে তাকে ডিসকো থেকে বের করে দিয়েছিল; যা সচরাচর জাপানের রাজপরিবারের কোনো সদস্যের বেলায় ঘটে না। ওই সময়টাকে ‘জীবনের সবচেয়ে সুখ ও আনন্দের সময়’ বলে নিজের স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

চলতি বছরের মে মাসে বয়সের ভারে ন্যুব্জ তার বাবা সম্রাট আকিহিতো দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন। উত্তরাধিকার সূত্রে ১২৬তম সম্রাট হন নারুহিতো।

মঙ্গলবার আঞ্চলিক দেশগুলো ও বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে মূলত রাজপ্রাসাদে বন্দিজীবন শুরু হল নারুহিতোর। সেই সঙ্গে যেন উড়ে গেল সব সুখ-শান্তি।

১৯৬০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেন নারুহিতো। মূলত রাজপ্রাসাদের কড়াকড়ির মধ্যেই কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। তবে জাপানের আর দশটা শিশু-কিশোরের মতোই তার শিশুকাল ছিল হাসি-খুশির।

প্রাসাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলে-মেয়ের সঙ্গে খেলা করতেন। কৈশোরে পড়াশুনার পাশাপাশি পাহাড়ে ওঠা, ঘোড়ায় চড়া আর ভায়োলিন বাজানোর মতো কর্মকাণ্ড উপভোগ করতেন তিনি।

একদিন প্রাসাদের কাছেই প্রাচীন একটি রাস্তার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান; যা তাকে পথ ও পরিবহনের প্রতি আগ্রহী করে তোলে এবং পরবর্তীতে নিজের সেই আগ্রহের বিষয়টাতেই উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

তরুণ বয়সে খেলাধুলা আর নানা সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন নারুহিতো। ভালো টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। অনুশীলন করতেন জুডো ও কারাতে। কারাতে ও জুডো ক্লাবের সস্মানসূচক প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন। যোগ দেন ‘জাপান সোসাইটি’ ও ‘ড্রামা সোসাইটিতে’। অক্সফোর্ডে থাকতে গলফ খেলাতেই হাত পাকিয়েছিলেন। চড়েছেন ব্রিটেনের তিন রাজ্যের তিন সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ায়ও।

রাজপরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে জাপানের বাইরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন নারুহিতো। লেখাপড়ার পাঠ চুকাতেই ১৯৯১ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে যুবরাজ হিসেবে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত হন তিনি। অবশেষে মঙ্গলবার নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্রাট হিসেবে দায়িত্ব নিলেন তিনি।

এর মধ্য দিয়ে তিনি আসলে স্বেচ্ছায় এক বন্দিজীবন বেঁছে নিলেন। কারণ জাপান সম্রাটের জীবন কঠোর নিয়ম-কানুন আর আচার-উপাচারের রহস্যে ভরা। শৈশব, কৈশোর ও আর যৌবনে অক্সেফোর্ডে যে সুখ ও আনন্দে কাটিয়েছেন তার ছিটেফোটাও নেই তার এই জীবনে।

এখন প্রতিনিয়ত তাকে আর তার পরিবারকে চলতে হচ্ছে ‘ইমপেরিয়াল হাউসহোল্ড এজেন্সি’ নামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কথা মতো। তারাই বলে দেয়, রাজপরিবার কী করতে পারবে আর কী পারবে না। বিশ্লেষকদের মতে, নিয়মকানুনের ক্ষেত্রে জাপান সম্রাট ও রাজপরিবার এতটাই বাঁধা যে, এক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা ভোগ করে ব্রিটিশ রাজপরিবার।